অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : এক হাতুড়ের কাছে কান পরিষ্কারের জন্য গিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়ার কোয়ারা গ্রামের যুবক শ্যামল প্রামাণিক। এ সময় তার কান দিয়ে গলগল করে বেরিয়ে আসে রক্ত। তারপরই কার্যত দিশেহারা হয়ে পড়েন ওই যুবক। বিপাকে পড়েন হাতুড়েও।
তবে রক্ত বন্ধ করার জন্য বিশেষ পরামর্শ দেন ওই হাতুড়ে। সেটা আবার করেও দেখান। তিনি শ্যামলের কানের ভেতর এমসিল আঠা ঢেলে দেন। শ্যামলের স্ত্রী সঞ্চিতার দাবি, হাতুড়ে বলেছিল কানে আঠা ঢুকিয়ে দিতে। এতে রক্ত বন্ধ হয়ে যাবে। এরপর আপনা থেকে সেই আঠাও বেরিয়ে আসবে।
কিন্তু সেসব আর হয়নি। কান পরিষ্কার শেষে বাড়ি ফিরেই অসুস্থ হয়ে পড়েন শ্যামল। যন্ত্রণায় মাথা ছিঁড়ে যাওয়ার মতো অবস্থা হয় তার। রাতটা কোনোরকমে বাড়িতে কাটান। এরপর রবিবার ভোর হতেই তাকে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এই হাসপাতালে পরীক্ষা করে চিকিৎসকরা দেখেন, শ্যামলের কানের ভেতর আঠা একেবারে শক্ত হয়ে বসে গেছে। এরপর চিকিৎসকরা কোনোরকমে সেই আঠা বের করে আনেন। তবে এই আঠা যে সে আঠা নয়। টিউবওয়েলের পাইপ জুড়তে এ ধরনের কড়া আঠা ব্যবহার করতে হয়। সেই আঠাই শ্যামলের কানে ঢেলে দেন হাতুড়ে।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, কানের পর্দা নষ্ট হয়ে গেছে শ্যামলের। এদিকে সেই হাতুড়ের খোঁজ করছে পুলিশ। অন্যদিকে, এভাবে কানের ক্ষত মেরামত করতে এমসিল ঢালার ঘটনাকে ঘিরে উঠেছে নানা প্রশ্ন। তবে কি কানকে তিনি পানির পাইপ লাইন ভেবেছিলেন?
যদিও অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গেছেন গাড়ি চালক শ্যামল। মারাত্মক যন্ত্রণা থেকে কিছুটা মুক্তি পেয়েছেন তিনি। তবে শ্রবণশক্তি তিনি অনেকটাই হারিয়েছেন। কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের সরকারি চিকিৎসকরা তাকে সুস্থ করার সমস্ত রকম চেষ্টা চালাচ্ছেন। তার কানের পর্দার মেরামতির কাজও করা হবে।
এদিকে, স্বামী প্রাণে বেঁচে যাওয়ায় হাসপাতালের চিকিৎসকদের ধন্যবাদ জানিয়েছে শ্যামলের স্ত্রী সঞ্চিতা। স্বামীকে নিয়ে এখনও ব্যস্ত তিনি। তবে এই ধরনের ঘটনা যে বাস্তবে হতে পেরে তা জেনে শিউরে উঠছেন অনেকেই। অভিযুক্ত হাতুড়ের কড়া শাস্তি চেয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
Leave a Reply